লেখক : মাজদি মুহাম্মাদ আশ-শাহাভি, মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ, সাইয়েদ মুবারক
প্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন, দারুল আরকাম, হুদহুদ প্রকাশন
বিষয় : পরিবার ও সামাজিক জীবন
কভার : পেপার ব্যাক
ভাষা : বাংলা
দাম্পত্যের ছন্দপতন:ইসলামে বিয়ের অন্যতম মূল উদ্দেশ্য হলো স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সুখী বন্ধন গড়ে তোলা—যেন দুটো প্রাণ একে অপরের মাঝে প্রশান্তি খুঁজে পায়। এজন্য সুখী দাম্পত্য বলতে কী বোঝায়, কীভাবে তা অর্জন করতে হয়, ধরে রাখতে হয়—এসবই আমাদের জানা প্রয়োজন। রসূলুল্লাহ (ﷺ)-এ সবকিছুই আমাদের বিশদভাবে শিখিয়ে গিয়েছেন।সুখী সংসারের অনেক নিয়ামক রয়েছে। সুখ কখনোই শুধু শারীরিক সম্পর্ক দিয়ে লাভ করা যায় না। হ্যাঁ, স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ একান্ত মুহূর্তগুলো সুখী সম্পর্ক গড়ে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর পাশাপাশি আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে কতটা স্বাচ্ছন্দ্যে সময় কাটাচ্ছেন, অর্থনৈতিকভাবে তারা কতটা সন্তুষ্ট—এসবও খেয়াল রাখা দরকার। উভয়ের ব্যক্তিত্বে মিল, ধর্মীয় বিষয়গুলোতে একই দৃষ্টিভঙ্গি—এসবও সম্পর্কের ওপর বেশ ভালো প্রভাব রাখে।সুখী সংসারের মজবুত ভিত গড়ার পথ ইসলাম আমাদের বাতলে দিয়েছে, শিখিয়েছে নানা মূলনীতি। এই মূলনীতিগুলো মেনে চললে দাম্পত্য জীবনে ভারসাম্য নিজে থেকেই চলে আসে। এ রকম কিছু মূলনীতি নিয়েই আমাদের ‘দাম্পত্যের ছন্দপতন’।এই গ্রন্থের লেখকদ্বয় দেখানোর চেষ্টা করেছেন কীভাবে সুখী দাম্পত্য জীবনের শক্ত ভিত গড়ে তোলা যায়—কোথা থেকে আসে নানা সমস্যার ঝড়-ঝাপটা, সেসবের মাঝে কীভাবে টিকে থাকতে হয়, এগিয়ে যেতে হয়। এছাড়া বইয়ের দ্বিতীয় অংশে আলোচনা করা হয়েছে পাত্র-পাত্রী নির্বাচন থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর অধিকারগুলো কী কী ইত্যাদি বিষয়াদি।নিজে বাঁচুন পরিবার বাঁচান:আমাদের এলাকায় এক আল্লাহ ওয়ালা ব্যক্তি ছিল। সে মানুষকে আল্লাহর পথে দাওয়াহ দিতে খুব পছন্দ করতো। দিনের বেলা ব্যবসা, আর সন্ধ্যার পর থেকে এলাকার মাসজিদে তালিম দিতো। অধিকাংশ সময় তাকে বিভিন্ন মানুষকে নসিহত করতে দেখা যেতো। সবাই তাকে খুব ভালোবাসে। তার তিন মেয়ে এবং এক ছেলে। তারাও বাবাকে খুব ভালোবাসে। কারণ সে তাদের কোনো আবদার অপূর্ণ রাখে না। যখন যা চায় দেয়। ছেলে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাবে, টাকা চাই!- সাথে সাথে দিয়ে দিয়েছে। বংশের একমাত্র ছেলে। মেয়েদেরকেও যথেষ্ট আদর করতেন তিনি। যখন যে পোশাক-অলংকার চেয়েছে, দিতে কৃপণতা করেননি। ছোট থেকেই খুব আদর স্নেহ করেন তিনি।
ফলে দেখা গেল তার সন্তানেরা যখন বড় হলো, তখন সব কিছু পাল্টে গেল! যে মানুষটা সর্বদা দ্বীনের পথে মানুষকে আহ্বান করে, তার ঘরে দ্বীনের ছিটে ফোটা নেই! সে যখন এশার পর মাসজিদে দাঁড়িয়ে নসিহত করে, সে সময়ে তার স্ত্রী-মেয়েদেরকে দেখা যায় মাসজিদের পাশ দিয়েই বেপর্দাভাবে হেটে যাচ্ছে। ছেলেটা রাত করে বাড়ি ফেরে। শোনা যাচ্ছে সে নেশাও করে। কিন্তু বাপ বেচারা কিছুই বলতে পারেন না। একদিন এক সাথি মুরুব্বি তাকে বললেন, ‘ভাই সাহেব! আপনার মেয়েগুলো এখন তরুণী। ওদের ওপর তো পর্দা ফরজ হয়েছে। ছেলেটার ব্যাপারেও একটু খেয়াল করবেন। ওকে তো..” উনি হেসে হেসে উত্তর দিলেন, ‘আরে ভাই! আজকালকার যুগে একটু আধটু তো সাজবেই। আরো সময় যাক, বয়স হলে এমনিতেই বুঝে যাবে। ইসলামে জোর জবরদস্তি নেই।”বাবা : আদর্শ সন্তানের কারিগর:সন্তান প্রতিপালন একটি আনন্দের বিষয়। হ্যাঁ তার মধ্যে কষ্ট-পরিশ্রম আছে, কিন্তু এটা মজাদার কষ্ট। আকর্ষণীয় পরিশ্রম।
এর সারকথা হলো, মানুষের জন্য অবধারিত পরিশ্রমের একটি রূপ। তবে এর ফল কষ্ট-পরিশ্রমের সকল চিহ্ন মুছে দেয়।
যেহেতু যুগ পরিবর্তন হয়েছে, তাই আমরা যে প্রতিপালনে বেড়ে উঠেছি, তা এ নবপ্রজন্মের জন্য যথেষ্ট হবে না। বরং এ পরিবর্তনকে পরিপূর্ণভাবে বিবেচনায় নেওয়া আমাদের জন্য অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে।
আজকের শিশু প্রতিপালন-বিশেষজ্ঞগণ এমনটাই তাগিদ দিয়েছেন। যেটার ব্যাপারে উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি.ও কঠিন গুরুত্বারোপ করেছিলেন তার এ বক্তব্যের মাধ্যমে, আপনাদের সন্তানদের আপনাদের যুগ থেকে ভিন্ন একটি যুগের জন্য প্রতিপালিত করুন। এ বই এমন অনেক প্রতিপালন বিষয়ক আলোচনা করেছে, যা আমরা আমাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে থাকি। আর এক্ষেত্রে আমরা যেসব ভুল প্র্যাকটিস করে থাকি, তাও উল্লেখ করেছে।
এমনকিছু কৌশল ও পথ বলে দিয়েছে, যা আপনাকে সেই আনন্দদায়ক জগত, তথা প্রতিপালন জগতের গিরিপথে চলতে সাহায্য করবে।
Brand: দারুল আরকাম