1334016730587411 Quranic Books

বীরাঙ্গনা

Product Code: 71

Stock: Available
Guarantee: 7 Days Money back grantee in accordance with T& C
Tk 280 TK : 168

বীরাঙ্গনা
রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে খালেদ বিন ওয়ালিদ রাযিআল্লাহু আনহু সাথীদের নিয়ে বীরদর্পে অগ্রসর হচ্ছিলেন। তার মুখে ছিল রণসংগীত, শরীরে ছিল ইমানি বল আর ছিল তেজে ভরা মন। থেকে থেকে আল্লাহু আকবার ধ্বণিতে মুখরিত করছিলেন চারপাশ। হঠাৎ তিনি তার পাশে উৎকৃষ্ট প্রজাতির লাল অশ্বে আরোহনরত এক অশ্বারোহীকে দেখতে পেলেন। যার বর্মের উপর শোভা পাচ্ছিল কালো পোশাক; যা পুরো দেহকে ঢেকে নিয়েছিল। চেহারায় নেকাব। আর সবুজ একটি বস্ত্র দ্বারা মজবুত করে বাঁধা কোমর। হাতে উজ্জ্বল দীর্ঘাকৃতির ধারাল বর্শা। চলনে-বলনে আভিজাত্য, বীরত্ব ও বুদ্ধিমত্তার ছাপ। ব্যক্তিত্ব থেকে ঠিকরে বেরাচ্ছিল বিচক্ষণতা ও রণকৌশলের নিদারুণ দক্ষতা।
অশ্বারোহী অগ্রসরমান সকলকে পিছনে ফেলে নির্বিঘ্নে সামনে এগুচ্ছিলেন। পরনের আলখেল্লা পতপত করে উড়ছিল। পিছনে রেখে আসছিলেন ধোঁয়ার মতো ধুলোরাশি।
মুসলিমরা শত্রু বাহিনীর কাছে পৌঁছা মাত্রই অশ্বারোহী এমনভাবে ঝাঁপিয়ে পড়লেন, যেন কোনো চিল উড়ে এসে আক্রমণ করল পাখিদের উপর। রোমানদের উপর দুর্দান্ত আঘাত হানলেন। ঘূর্ণির মতো ঘুরাতে লাগলেন এক হাতের তরবারি। সমানতালে অপর হাতে চালাতে লাগলেন বর্শা। মুহূর্তেই তৈরি করলেন সেনাদের লাশের স্তুপ। লাশের পর লাশ মাড়িয়ে আরো সামনে এগুলেন। হাতের বর্শা ফেলে দিলেন। কোষমুক্ত করলেন আরেক তলোয়ার। দুই হাত বুক পর্যন্ত তুলে দুনো তরবারির বাট শক্ত করে ধরলেন। তরবারির ফলা রাখলেন দুদিকে। মুখ দিয়ে জোড়াল ‘হু' আওয়াজ করে অশ্বকে সর্বশক্তিতে চলার ইশারা করলেন। বিদ্যুৎ গতিতে চলতে লাগল ঘোড়া। আর কচুকাটা হতে লাগল দু পাশের খ্রিষ্টান সৈন্য।
যুদ্ধের ময়দানে ত্রাস ছড়িয়ে পড়ল। রোমানরা তাকে আকস্মিক বজ্র মনে করল। তার পথ রোধ করার দুঃসাহস কেউ করল না। দৌড়ে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করতে লাগল। ততোক্ষণে তিনি ময়দানের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলে গেলেন। বেড়িয়ে পড়লেন সেই প্রান্ত দিয়েই। তখন তার দুই তরবারি রক্তস্নাত। টপটপ করে রক্ত ঝরছিল তরবারির ধারালো পাত থেকে।
আবার তিনি আক্রমণাত্মক লড়াই চালিয়ে গেলেন। ময়দানের অন্য প্রান্তের সারি ভেদ করে প্রবেশ করলেন শত্রুদের মাঝে। হাজার হাজার কাফেরদের কাউকেই ছাড়লেন না। যেই সামনে এলো তাকেই টুকরো করে পাঠিয়ে দিলেন জাহান্নামে।
তার বীরত্বপূর্ণ আক্রমণ দেখে রাফে বিন উমায়ের বললেন,
: এই বীর নিশ্চয় খালেদ বিন ওয়ালিদ হবেন।
কিন্তু তিনি যখন যুদ্ধ করতে করতে খালেদ বিন ওয়ালিদের কাছে পৌঁছলেন, তখন আশ্চর্য হয়ে গেলেন। বিস্ময় ভরা কণ্ঠে খালিদ রাযিআল্লাহু আনহুকে বললেন,
: আপনি এখানে? তাহলে ওদিকে কাকে দেখে এলাম?
খালেদ রাযিআল্লাহু বললেন,
: আমিও তাকে দেখেছি। তার বীরত্ব দেখে অভিভূত হয়েছি। কিন্তু বুঝতে পারছি না সে কে?
এরপর সংঘর্ষ আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হলো। শত্রুরা নতুন উদ্যমে আবার তুমুল যুদ্ধ শুরু করল। খালেদ বিন ওয়ালিদ রাযিআল্লাহু আনহু বাহিনীর অগ্রে গেলেন। আবার তার চোখে পড়ল সেই অশ্বারোহী। তিনি শত্রুদের রক্তে রঞ্জিত। ঘর্মাক্ত তার ঘোড়া। কিন্তু থেমে নেই। অবিরাম চলছে তার আক্রমণ। মুহূর্তের জন্যও শত্রুদের ছাড় দিতে নারাজ। খালেদ রাযিআল্লাহু আনহু তাকে একাই কয়েকজনের সাথে মোকাবেলা করতে দেখলেন। তিনি ত্বরিত তার পাশে চলে গেলেন। আক্রমণ করে শত্রুদেরকে তার আশ-পাশ থেকে তাড়িয়ে দিলেন। খালেদ বিন ওয়ালিদ রাযিআল্লাহু আনহু মনে মনে বললেন,
: আল্লাহর কসম! এই বীর অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে যুদ্ধ করছে।
তিনি মনে মনে এই বীরের সাথে সাক্ষাতের প্রচণ্ড স্পৃহা ব্যক্ত করলেন।
কিছুক্ষণের জন্য যুদ্ধ মুলতবি ঘোষণা করা হলো। খালেদ রাযিআল্লাহু মুসলিম শিবিরে ফিরে এলেন। অশ্বারোহীও ফিরলেন মুজাহিদদের সাথে। মুজাহিদরা তাকে আড়চোখে দেখতে লাগলেন। তাদের মনে হলো, তিনি যেন রক্তমাখা গোলাবের কোনো পাপড়ি। খালেদ রাযিআল্লাহু আনহু তাকে বললেন,
: তুমি আল্লাহর দুশমনদের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত বীরত্বের পরিচয় দিয়েছ। আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধে অনন্য ভূমিকা পালন করেছ। এখন দয়া করে তোমার পরিচয় বলো!
অশ্বারোহী তখনও পুরাদস্তুর কালো কাপড়ে আবৃত। চেহারা নেকাবে ঢাকা। খালেদ রাযিআল্লাহু আনহুর কথা শুনে তিনি কিছু বললেন না। চুপ করে রইলেন। পরবর্তি যুদ্ধের জন্য তৈরি হতে লাগলেন।
হযরত খালেদ উত্তর না পেয়ে পুনরায় বললেন,
: তোমার পরিচয় দাও।
এবারও তিনি নিরুত্তর। নিজের কাজে ব্যস্ত। যেন পণ করেছেন কথা না বলার।
খালেদ রাযিআল্লাহু আনহু এবার কঠিন সুরে বললেন,
: আরে আল্লাহর বান্দা! তুমি তো আমাকে এবং সকল মুসলমানকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিচ্ছো! একে তো বেপরোয়া হয়ে যুদ্ধ করছ, দ্বিতীয়ত নিজের পরিচয়টাও দিতে চাইছো না! আসলে কে তুমি বলো তো!
পীড়াপীড়ির কারণে পর্দাবৃত অশ্বারোহি থেকে নারী-কণ্ঠের আওয়াজ ভেসে এলো।
উপস্থিত সবাই নারী-কণ্ঠ শুনে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন। একজন নারী কথা বলে উঠবে, এটা তাদের ধারণাতেও ছিল না।
তিনি বললেন,
: আমি আপনাকে উপেক্ষা করছি, তা নয়। আসলে লজ্জায় কিছু বলতে পারছি না। তাছাড়া আমি একজন নারী। পুরুষ নই। যুদ্ধে যেতে বারন করতে পারেন। তাই কথা না বলে চুপচাপ আছি।
হযরত খালিদ মূল পরিচয় না পেয়ে নির্লিপ্ত থেকে বললেন,
: তোমার পরিচয় তো বলো!
লজ্জাবনত মস্তকে তিনি বললেন,
: আমি দিরার বিন আযওয়ারের বোন খাওলা। গতকালের যুদ্ধে মুসলিম শিবিরেই ছিলাম। সন্ধ্যাবেলা ভাইয়ের বন্দি হওয়ার খবর শুনে কষ্ট পেয়েছিলাম। তাই আজ ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছি। ভাইয়ের বিপদে বোনরাই তো এগিয়ে আসে….
খালিদ রাযিআল্লাহু আনহুর গতকালের ঘটনা মনে পড়ল। বিষণ্ণতায় ছেয়ে গেল অন্তর। গতকাল তার আদলে থেকে রাসূলের অনেক সাহাবি শহীদ হয়েছেন। বন্দিও হয়েছেন পাঁচজন। তাদের মাঝে আছে তার প্রিয় সহচর দিরার। তিনি যাকে বীরত্বের কারণে সময়ে অসময়ে বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করতেন। নানা ধরণের হাদিয়া-উপঢৌকন দিতেন।
চলুন ঘুরে আসি গতকালের ময়দান থেকে। সেই সাথে জানাও হয়ে যাবে খাওলা রাযিআল্লাহু আনহার ভাইয়ের পরিচয় আর তার বন্দি হবার ঘটনা।

নারী সাহাবিদের জীবনী নিয়ে অনেক বই লেখা হয়েছে। অনেক অনুবাদ, অনেক মৌলিক বই পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। তন্মধ্যে এমন সাহাবিয়াদের জীবনীও আছে, যাঁরা জিহাদের ময়দানে দৃঢ়তা ও অবিচলতার নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন। আহতদের জখমে পট্টি বেঁধেছেন। তাঁদেরকে পানি পান করিয়েছেন। যুদ্ধকালে মুজাহিদদের সাহস যুগিয়েছেন।
কিন্তু এতশত বইয়ের ভিড়ে নারী সাহাবিদের জীবনী সম্বলিত এমন একটি বইও আমার চোখে পড়েনি যাঁরা মুজাহিদদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন; যাঁদের রণহুংকারে বাতিলের তখত-তাকাত থরথর করে কেঁপেছে। আমি খুঁজেছি। অনেক খুঁজেছি। স্যোশাল মিডিয়ায়, বিভিন্ন প্রকাশনে, বই বোদ্ধাদের কাছে। কিন্তু পাইনি কোথাও। আপনারা পেয়েছেন কী?
তাই বইটিতে এমন বারোজন যোদ্ধা সাহাবিয়াদের জীবনী তুলে ধরেছি, রণাঙ্গনে যাঁরা সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধে এমন বীরত্ব প্রদর্শন করেছেন, যা দেখে পুরুষরাও ঈর্ষান্বিত হয়েছেন। রণাঙ্গনে তাঁদের রুদ্রমূর্তি দেখে অনেকে বলেও ফেলেছেন, 'যোদ্ধা নিশ্চয় খালিদ হবেন বা কোনো ফেরেশতা।'
বইটিতে উল্লেখ আছে খোদার রাহে শাহাদাত অর্জনকারী নারী সাহাবির জীবনী।


নারী আমাদের মা। নারী আমাদের বোন। নারী আমাদের কন্যা। এবং নারীই আমাদের জীবনসঙ্গিনী। নারী ছাড়া পৃথিবীর কোনো কিছুই পূর্ণতা পায়নি। একমনকি রক্তক্ষয়ী রণক্ষেত্রেও নারীদের অগ্রাণী ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। তারাও অকাতরে জীবন বিলিয়েছেন এক আল্লাহে। উড্ডিন করেছেন কালিমা খচিত পতাকা।
বক্ষমান বইটি পত্রস্থ হয়েছে এমনই কজন বীরাঙ্গনা নারীদের নিয়ে; যাদের সকলেই ছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবিয়া, ইসলামে যাদের অবদান অনস্বীকার্য।


এমন ১৩ জন নারী যোদ্ধা সাহাবিয়া, যারা সরাসরি তরবারি হাতে যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। তাঁদেরকে নিয়ে রচিত বই




বইয়ের নাম: বীরাঙ্গনা
লেখক: সালিম আব্দুল্লাহ
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৬০

Brand: আবরণ প্রকাশন

No one has made any reviews yet.


Related Products


  • Img error

    ইতিহাসের স্বর্ণরেণু

    300 Tk
    150 Tk
    Buy
  • Img error

    গল্পে আঁকা ইতিহাস

    580 Tk
    290 Tk
    Buy
  • Img error

    প্রাচ্যবিদদের ইসলাম চর্চার নেপথ্যে

    140 Tk
    70 Tk
    Buy
  • Img error

    প্রাচ্যবিদদের দাঁতের দাগ

    240 Tk
    120 Tk
    Buy
  • Img error

    বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেড

    240 Tk
    180 Tk
    Buy
  • Img error

    মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ (উন্নত সংস্করণ)

    9,000 Tk
    4,500 Tk
    Buy
  • Img error

    সকালের মিষ্টি রোদ

    120 Tk
    60 Tk
    Buy
  • Img error

    স্মৃতির দর্পণে দারুল উলূম দেওবন্দ

    200 Tk
    100 Tk
    Buy