লেখক : প্রফেসর ড. নাজমুদ্দিন এরবাকান
অনুবাদক : বুরহান উদ্দিন
আইএসবিএন : ৯৭৮-৯৮৪-৯৪৯৫১-৫-৪
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২৪০
বই সম্পর্কে :
মানবজাতির মুক্তির একমাত্র সম্ভাবনা ইসলাম, যা আল্লাহ প্রদত্ত একমাত্র জীবন-বিধান। এজন্যই এটি একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যাতে নেই কোনো কম-বেশির অবকাশ। ইসলাম প্রতিষ্ঠার কর্মতৎপরতায় শামিল হবার সৌভাগ্য সবার হয় না। দ্বীনের বিজয়ে কেউ দিন-রাত কাজ করুক বা না করুক, কঠোর পরিশ্রমী হোক কিংবা অলসতায় নরম বিছানায় মাথা গুঁজে থাকুক, বিজয়কে একদিন এগিয়েও আনতে পারবে না আবার একদিন পিছিয়েও দিতে পারবে না। বরং সব কিছুর মূলে হলো ‘এই সত্য আহ্বানের কর্মতৎপরতায় কতটুকু ভূমিকা পালন করছি তা।
লেখক সম্পর্কে :
প্রফেসর ড. নাজমুদ্দিন এরবাকান (তুর্কি : Necmettin ERBAKAN; জন্ম : ২৬ অক্টোবর, ১৯২৬ মৃত্যু : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১১) হলেন তুরস্কের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী। তিনি একাধারে একজন রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, সফল বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী। একইসাথে প্রখ্যাত আলেম, মুজতাহিদ এবং হাফেজে কোরআন ছিলেন।
ইস্তাম্বুল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কৃতিত্বের সর্বোচ্চ স্বাক্ষর রাখা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই প্রকৌশলীর সবচেয়ে বড় অবদান ‘ডি-৮ গঠন ও নতুন বিশ্বব্যবস্থার প্রস্তাবনা'।
নাজমুদ্দিন এরবাকান ক্ষমতায় থাকাকালে ক্স বাংলাদেশসহ আটটি উন্নয়নশীল মুসলিম দেশ নিয়ে ডি-৮ গঠন করেন। গাজাসহ সমগ্র দুনিয়ার মজলুম জনগণকে সাহায্যকারী তুরস্কের সর্ববৃহৎ দাতব্য সংস্থা IHH ও CANSUYU-এর প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। সাইপ্রাস বিজয়, বসনিয়া এবং মরো রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর রয়েছে ঐতিহাসিক ভ‚মিকা ।
বাংলা ভাষায় নাজমুদ্দিন এরবাকানকে আরও জানতে এ বই দুটি পড়তে পারেন :
* ইসলাম ও জ্ঞান
* নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার প্রস্তাবক; নাজিমুদ্দিন এরবাকান
জন্ম ও পরিবার:
প্রফেসর ড. নাজমুদ্দিন এরবাকান ১৯২৬ সালের ২৬ অক্টোবর তুরস্কের সিনপ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা-মোহাম্মদ সাবরি এরবাকান। ছিলেন তুরস্ক সরকারের বিচারপতি। মায়ের নাম খামের।
শিক্ষাজীবন:
কায়সেরির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই তাঁর প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি। সেরা ফলাফল অর্জনের মাধ্যমে তিনি তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন তুরস্কের সর্ববৃহৎ কলেজ ইস্তাম্বুল বয়েজ কলেজ থেকে। সমকালীন শিক্ষার পাশাপাশি তিনি তাঁর উস্তাজ, সেসময়ের প্রখ্যাত আলেম মেহমেদ জাহিদ কতকুর কাছ থেকে ইসলামী শিক্ষায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। ১৯৪৩ সালে উচ্চমাধ্যমিকে অসাধারণ ফলাফল অর্জন করে ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
কর্ম ও অবদান:
১৯৪৮ সালে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে রেকর্ড সংখ্যক নাম্বার পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং স্নাতক শেষ হতে না হতেই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ডিপার্টমেন্টে শিক্ষানবিশ ও সহকারী প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। তুরস্কের মোটর উৎপাদনের জন্য তিনি ২৫০টি মোটরের সমন্বয়ে নতুন একটি মোটর তৈরি করেন এবং সেটির উপর তিনি তার PhD এর থিসিস তৈরি করেন। তাঁর থিসিস বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশ পেলে ১৯৫১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁকে জার্মানীর বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় Aachen Technical University-তে গবেষণার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে তিনি জার্মান সেনাবাহিনীর জন্য প্রতিষ্ঠিত DVL গবেষণা কেন্দ্রে সেসময়ের বিখ্যাত প্রফেসর স্কিমিদ (Schimidt)-এর সাথে কাজ করেন। দেশে ফিরে মাত্র ২৭ বছর বয়সে ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেন।
নাজমুদ্দিন এরবাকানের "তুরস্কের প্রয়োজনীয় সব যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ তুরস্কের মাটিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠানেই উৎপন্ন হবে" এই স্লোগানকে সামনে রেখে সম্পূর্ণ ব্যক্তি মালিকানায় দেশপ্রেমিক ২০০ জন উদ্যোক্তার অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তিনি গুমুশ ইঞ্জিন ফ্যাক্টরী প্রতিষ্ঠা করেন।
রাজনৈতিক জীবন ও উম্মাহর স্বার্থে কাজঃ
তিনি তাঁর উস্তাজ মেহমেদ জাহিদ কতকুর পরামর্শে রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। প্রতিষ্ঠা করেন মিল্লি গুরুশ আন্দোলন। উপপ্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তিনি একদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন এবং ওই একদিনেই তাঁর নেতৃত্বেই সাইপ্রাস বিজয় হয়েছিল। এছাড়াও তিনি বসনিয়া মুক্তি সংগ্রামে আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। নিজেদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি আটটি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ডি-৮ গঠন করেন। তাঁর জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল যুগান্তকারী আলোকবর্তিকা।
মৃত্যু:
২০১১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আল্লাহর এই প্রিয় বান্দা প্রফেসর ড. নাজমুদ্দিন এরবাকান তাঁর রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যান আর রেখে যান তাঁর স্মৃতি ও প্রেরণার রঙের তুলি।
Brand: মক্তব প্রকাশন